মূলের যত কাঁপন (Tremores del origen)
অব্যর্থ সত্য।
অব্যর্থ সত্যি কি?
(কোরান ৬৯, ১)
একটি অস্তিত্বহীন বইও দৃঢ়ভাবে বলে থাকে
যিনি বুদ্ধের পথে হাঁটেন
তাঁকে শান্ত হতে শিখতে হয়।
“আলোকিত কন্ঠ-- অস্তিত্বহীন বইটি বলে থাকে--
হল জলের নীচে থাকা পদ্ম যেন”।
এই ভাবনা (নিগূঢ় মৃগ যেন)
সেই মহান অতীন্দ্রিয় কবি আল তুরাইয়েকের
সাঙ্গীতিক বুনন-– যিনি রাঙিয়ে
তোলেন, আরবী জীবনীকারদের মতে
তিনি কখনও অস্তিত্ববান ছিলেন না--
“শব্দের খোলবিশেষ
আকাশের নিচে থাকা প্রাণীরা
ওদের আগলে রাখি মূলের যত কাঁপন থেকে।
এখানে-- আমার গভীরতম জলে--
কবিতারা পুষ্পিত হয়”।
শব্দের বিশুদ্ধ দুধ (Leche pura del sonido)
তিনি চলমান এবং একই সঙ্গে অচল
(শ্রীভগবদ্গীতা ত্রয়োদশ অধ্যায়, ১৫)
শব্দের বিশুদ্ধ দুধ
তোমার পায়ের মাঝে খোলা আকাশ,
নরকের ওইপারে
যেখানে সব কিছুর জন্ম।
শীর্ষসুখ, আলোর তীর ঘেঁষে
মহাজাগতিক পশু
এসো প্রার্থনা করি--
যিশুখ্রিস্টের নাভিকুণ্ডলী,
স্বর্গীয় কোষের খাদ্য,
নারীর গর্ভপুষ্পে স্বর্গের মূল।
স্তন্যপায়ী কুমারী, স্তন্যপায়ী ঈশ্বর,
স্তন্যপায়ী রহস্য--
এসো নগ্ন হই।
স্তন্যপায়ী কুমারী, স্তন্যপায়ী ঈশ্বর,
স্তন্যপায়ী রহস্য--
এসো স্তন্যপান করি।
তোমার ক্রিয়ায় যদি সারস গর্ভবতী হয়
যার উষ্ণতা নেমে আসে আমাদের উপর--
শতাব্দী জুড়ে শতাব্দী থেকে আসা কলম ও সঙ্গীত,
বাগানের বিষাক্ত দাতুরা গাছে থাকা কলম ও সঙ্গীত।
অন্য পাখিটি (Otro pájaro)
যে স্বপ্ন আমি দেখেছি আপনারা তা শুনুন
(জেনেসিস ৩৫, ৬)
পাখিটির গভীর অন্দরে
গায় গান
যে ঘুমায় অন্য পাখিতে,
আমার স্বপ্নের কম্পনশীল
রামধনু জঙ্গলে।
কেরুবিন, ঈশ্বরে মহিমা রক্ষক দেবদূত (Querubín)
দেবদূতেদের দেখবে তুমি
(কোরান ৩৯, ৭২)
জাগুয়ারের বেদীর উপর
একজন দেবদূত আমাকে তাঁর দেহ নিবেদন করেছিলেন,
তাঁর ছায়াহীন পশুমাংস।
তাঁকে বলেছি-- “তুমি ধূলিকণা, হবে সূর্য
এবং নাড়িভুঁড়ি, যারা আমার উপর রাজত্ব করে
তারা তোমায় গ্রহণ করে। তুমি প্রবেশ করো, আমার অন্দরে,
প্রগাঢ় অদ্ভূত জীব, আনন্দ কর”!
সেসময়, এমনই ছিল-
রাত্রি উন্মোচিত হয়েছিল তার হলুদ চোয়ালে,
এবং একটি পাখি ঘোষণা করেছিল তার অনুষ্ঠান--
কাইউহ, কাইউহ,
কাইউহ, কাইউহ।
(আকাশ-নীল অণু চর্বণ করতে করতে)
তখনই আমার দাঁতেরা জয় করেছিল,
অ্যানাকোন্ডার, চামান পশুর, ভেড়ার, তেলাপোকার, অশ্বের,
হাতি, সীগাল, গ্রহদের,
জাগুয়ারের বেদীর উপরে থাকা এক রহস্য,
স্বর্গের দেবদূতেরা পুষ্টি গ্রহণ করেন,
জঙ্গলে জন্মেছিল যে সব জীবন্ত প্রাণ
আলোর সর্বভুক বিচ্ছুরণ থেকে।
চলো প্রার্থনা করি--
পুতুমাইয়ো নদীতীরের ইন্ডিয়ান দেবদূত,
ব্যাঘ্রদেবতা যিনি গ্রাস করেন মহাবিশ্ব,
প্রবেশ করো আমার ভেতরে,
আনন্দ কর!
ছাগনন্দিনী (Niña cabra)
সকলেই আমার ভিতর
(শ্রীভগবদ্গীতা নবম অধ্যায়, ৪)
তুমি, ছাগ নন্দিনী,
নামহীন, রাজনন্দিনী,
বিচরণরত,
সাদা পশম, অরণ্যের নিস্তব্ধতা,
আলোর ধ্বংসাবশেষ,
এসো আমার দৃষ্টির ভিতর নিয়ে এসো--
নিদ্রামগ্ন বাদুড় ভরা বাগানে--
বিস্ময়কর শিং যত,
তীক্ষ্ণ হীরকেরা
যারা আহত করেছিল বন্য পশুদের
হলুদ ফুসফুস।
ছাগনন্দিনী,
আমার কুয়াশার কুয়াশা
নক্ষত্রমাতা এবং ইউনিকর্নের আতংক,
ফিরিয়ে দাও আমার শরীরে
তার পাশব প্রশ্বাস।
-------------------------------------------------------------------------
কলম্বিয়ান কবি ইকারো ভালদেররামা। স্প্যানিশ ভাষায় লেখেন। একই সঙ্গে তিনি গায়ক ও প্রযোজক। সারা পৃথিবী ঘুরে বেরিয়েছেন। সাইবেরিয়া ও মঙ্গোলিয়ার সংস্কৃতি তাঁর বিশেষ ঝোঁক। কিছুদিন আগে কলকাতা পোয়েট্রি কনফ্লুয়েন্সে তিনি থ্রোট সিঙ্গিং পরিবেশন করেন।
No comments:
Post a Comment