আঁধারের পথ ধরেছে এখন কালরাত্রি।
আর আমি... এইখানে,
এই বুড়ো অশ্বত্থ গাছটার তলায় বসে বসেই
প্রহর গুনতে গুনতে খালি ভাবছি;
কিভাবে এই এক আকাশজোড়া গর্ভবতী মেঘের কান্নায়
বাঁধ ভেঙে গল্পশেষে ছিন্নভিন্ন হয়ে যাবে
আমার হার না মানা বুকের
শেষ এই একরত্তি ভগ্নাংশও।
তা যাক।
যা বলছিলাম।
এই সামনের বড়রাস্তাটা পেরলেই জানি,
তোমার চৌহদ্দি শুরু।
ওই তো, এখানে বসেই
দিব্যি ঠাহর করতে পারছি
তোমার বাড়ির গলির মুখেই হাঁ করে দাঁড়িয়ে থাকা
বোবা ল্যাম্পপোস্টটার আবছা অবয়ব,
যার আলো আঁধারিতেই প্রথম
সব ছেড়ে পাড়ি জমিয়েছিলাম একদিন
নিজের বাড়ি ফিরব বলে।
জানতাম না তখনও অবশ্য,
তুমিও কোনোদিন বলোনি,
এই ভাগীরথীর বানেই কবে
ভেসে গেছে আমার সেদেশের সবকিছু,
যা পরে আছে,
তাতে মাথাটুকু গোঁজবারও ঠাঁই নেই আর কোথাও।
অগত্যা,
এই নদীর কোটর উপচে পরা ভরা শ্রাবণের জল সামলে
এই গাছতলাতেই বেঁধেছি আপাতত
আমার অস্থায়ী একখানা ঠিকানা।
রোজ সকালে সাঁতার শিখছি
এইখানেরই এক বস্তির কিছু রোজ রাতে
বরের বাপের হাতে মার খাওয়া মেয়ে-বউদের কাছে।
তারপর ঠিক করেছি,
এই বুকজলেই নেমে একদিন ভাসতে ভাসতে
পৌঁছে যাব প্রশান্ত মহাসাগরের কোনও ঔপনিবেশিক চত্বরে;
যেখানের গাংচিলেরা
ভাষা হারানো কোনও স্বপ্নের গভীরে দাঁড়িয়ে
কথা দিয়ে গেছে আমায়,
সামান্য হলেও জায়গা করে দেবে তাদের আস্তানায়,
খড়কুটো জুটিয়ে যেখানে ছোট্ট হলেও অন্তত:
ঠিক বুনে নেব
আমার নিজের ঘর।
বেশ হবে বল?
তুমি এসব নিয়ে আবার কিন্তু বেশি ভাবতে বোসো না।
নাঃ, অনেক রাত হল,
এবার শুতে যাও বরং।
তবে শোওয়ার আগে
রাতের প্রেশারের ওষুধটা আবার
খেতে ভুলে যেওনা যেন,
কেমন?
No comments:
Post a Comment