Wednesday, August 12, 2020

রাহাত ইন্দোরির গজল


অনুবাদ: আমান রহমান

অচেনা এই ইচ্ছেগুলো পারি না বুকে পুষতে

এমনই এই চঞ্চল পাখি পারি না উড়িয়ে দিতে

এক ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দেব মনের যত ধুলো 

এটা তো তোমার চিঠি নয়, তাই পারব না জ্বেলে দিতে!

আমার লজ্জা এমনই যে, ভরা মেহফিলে কাছে ডাকলে, 

মধুর স্বরে বুক বিঁধে যায়, পারি না কাছে আসতে।

ফলগুলো সব পেকে রয়েছে গাছের ডালে ডালে

ডালগুলো তবু এতই নরম, নাড়লেই ভেঙে পড়বে!

কোনও এক ক্ষণে খুঁজে নেব ঠিক তোমাকেই,  তোমাকেই

ঠোকর তো আর বিষ নয় যে, খেয়ে নিলে হবে মরতে!


ভিজে চোখ নিয়ে, ঠোঁটে আগুনের ফুলকি রেখো 

বাঁচতে চাইলে, উপায়টুকুও সাজিয়ে রেখো 

পথে পড়ে থাকা পাথরগুচ্ছ ছাড়া, কীই-বা তোমার আছে?

পথ বলে তাই: হে বন্ধু, পথ চলতে থেকো।


দুইটি তীরের মধ্যিখানে বয়ে চলে একা নদী

জীবন যদি বন্ধু হয়, মৃত্যুকে পাশে রেখো,

বয়ে চলা মহাকাল তোমার কানে বলে

'যুদ্ধ হবে যুদ্ধ হবে', বন্ধু তৈরি থেকো।


চোখের পলকে ভরসা যেন সর্বদা স্থির থাকে

চোখে ঘুম নিয়ে অথবা জেগেই, স্বপ্ন বাঁচিয়ে রেখো।

দমকা হাওয়ায়, না উড়ে যায় শুকনো পাতার দেহ

পাথরে যেন ওজন থাকে সে দিকে নজর দিয়ো

সবাই বলছে, 'বাজারে এসেছে রাহাতের কবিতা'

বাজার বলে কি সস্তা হবে! একটু  খেয়াল রেখো।

---------------------------------------------------------------

করোনায় আক্রান্ত হয়ে চলে গেলেন বিশ্বখ্যাত উর্দু কবি রাহাত ইন্দোরি। কয়েক মাস আগে দেশ যখন নাগরিকত্ব আইন নিয়ে উত্তাল, তখন তাঁর কলম থেকে আগুন ঝরেছিল। সেই সময় রাহাত লেখেন: 'সভি কা খুন হ্যায় শামিল ইহাঁ কি মিট্টি ম্যায়, কিসি কি বাপ কা হিন্দুস্তান থোড়ি হ্যায়!' তাঁর লেখা এই লাইন তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। দেশ হারাল এক নির্ভিক কবি ও শিল্পীকে।

No comments:

Post a Comment